বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৬ পূর্বাহ্ন
বাসস :
ড. হাছান বলেন, ‘ইতিমধ্যে দেশের প্রায় ৭ কোটি মানুষ নানাভাবে সরকারি সাহায্য-সহায়তার আওতায় এসেছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এমন ঘটনা কখনো ঘটেনি। দেশের সমস্ত কওমি মাদ্রাসায় ঈদের আগে দুই দফায় টাকা দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন মসজিদে টাকা দেয়া হয়েছে। এইভাবে ত্রাণ তৎপরতা আশেপাশের কোনো দেশে হয়েছে কিনা আমার জানা নাই। ’
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা পরিষদ হলে করোনাভাইরাসের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়া খেলোয়াড়দের মাঝে সরকারের পক্ষ থেকে উপহার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ বণিক, থানার ওসি সাইফুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদার, ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিছ আজগর, নজরুল ইসলাম তালুকদার, ইকবাল হোসেন চৌধুরী মিল্টন, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আরজু সিকদার।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এটি একটি খেটে খাওয়া মানুষের দেশ। এখানে কোটি কোটি মানুষ খেটে খায়। করোনাভাইরাসের কারণে আজকে দুই মাসের বেশি সমগ্র বাংলাদেশে প্রায় সমস্ত কর্মকাণ্ড বন্ধ। অনেকে অনেক শঙ্কা-আশঙ্কার কথা বলেছিলেন, সেই শঙ্কা-আশঙ্কাগুলোকে মিথ্যে প্রমাণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সরকার।
‘প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এমন বৃহত্তম ও সুপরিকল্পিত ত্রাণ কার্যক্রমের কারণে দেশের একজন মানুষও আল্লাহর রহমতে অনাহারে মৃত্যুবরণ করেনি’ বলেন তিনি।
করোনাভাইরাস খুব সহসা পৃথিবী থেকে যাবে না বলে মনে হচ্ছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দীর্ঘদিন মাসের পর মাস বন্ধ করে একটি দেশ চলতে পারে না। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড মাসের পর মাস বন্ধ রেখে কোনো দেশ ঠিকে থাকতে পারে না। সেই কারণে উন্নত দেশগুলোতেও আস্তে আস্তে নানা কর্মকাণ্ড শুরু করা হয়েছে। মানুষ কাজে ফিরে গেছে। আমাদেরকেও ধীরে ধীরে সেই কাজটি করতে হবে। তবে মাথায় রাখতে হবে সেই কাজটি করতে গিয়ে আমরা যেন আবার জনসমাগম না করি এবং শারীরিক দূরত্বটা বজায় রাখি।
হাছান মাহমুদ বলেন, কর্মকাণ্ড শুরু হলেও আমাদেরকে অবশ্যই সচেতন থেকে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে কাজকর্মগুলো করতে হবে। না হয় আমরা নিজেদেরকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা দিতে পারব না। মনে রাখতে হবে, আমার সুরক্ষা আমার হাতে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সারা দেশে প্রায় ১ কোটি বিশ লাখ মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দেয়া হয়েছে। দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা, সংসদ সদস্য ও জনপ্রতিনিধিরা প্রত্যেকটি উপজেলায় ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে ছুটি শুরু হবার প্রথম সপ্তাহ থেকে আমার নির্বাচনী এলাকা রাঙ্গুনিয়া উপজেলা ও বোয়ালখালি আংশিক এলাকায় আমার পারিবারিক প্রতিষ্ঠান এনএনকে ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করা হয়। ঈদের আগের দিন পর্যন্ত খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। আমরা বেছে বেছে সিএনজি, রিকশা, জিপ ড্রাইভার, নৌকার মাঝিসহ সব খেটে খাওয়া পেশাজীবীদের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছি।’
‘ঈদের আগে প্রত্যেকটি মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনের কাছে ঈদ উপহার সামগ্রী পৌঁছানো হয়েছে। এই পরিস্থিতি বিরাজমান থাকলে সেটি অব্যাহত থাকবে’ বলেন তিনি।
সরকারি বেসরকারি মিলিয়ে রাঙ্গুনিয়ার ৬০ হাজারের বেশি মানুষের পরিবারে ত্রাণ পৌঁছে গেছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমার আহ্বানে দলের নেতাকর্মীরাও অসহায় ও কর্মহীনদের ঘরে ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছেন। এটি একটি অভাবনীয় ব্যাপার। আল্লাহর রহমতে রাঙ্গুগুনিয়ায় কোন হাহাকার নাই। অনেকে একাধিকবারও ত্রাণ পেয়েছেন।’
খেলোয়াড়দের উদ্দেশ্যে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, করোনাভাইরাসের মধ্যে খেলাধুলা বন্ধ থাকায় খেলাধুলার ওপর নির্ভর করে যাদের জীবিকা চলে তারাও অনেকটা কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত থাকার জন্য শরীরচর্চাও অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটা ব্যাপার। সেটি এলাকার মানুষদের উদ্বুদ্ধ করবেন খেলোয়াড়রা। কিছুদিন পরে খেলাধুলোও আমাদের সীমিত আকারে চালু করতে হবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, রাঙ্গুনিয়া খেলোয়াড় সৃষ্টি করার একটি কারখানা। এখান থেকে জাতীয় ফুটবল দলে বেশ কয়েকজন খেলেছেন এবং এখনো খেলছেন। বহু বছর ধরে রাঙ্গুনিয়ার ছেলেরা জাতীয় দলে প্রতিনিধিত্ব করছেন। শুধুমাত্র ফুটবল নয় অন্যান্য খেলার ক্ষেত্রেও রাঙ্গুনিয়ার ছেলেরা ক্রীড়া নৈপুণ্য প্রদর্শন করতে সক্ষম হয়েছে। এজন্য তিনি বলেন, এলাকার খেলোয়াড় সমিতি ও খেলোয়াড়দের অভিনন্দন জানাই।